ছায়ার মৃত্যু

মৃত নগরীর শেওলাধরা প্রাচীর ঘেষে হেটে যাই,
সূর্য দেখে সমুদ্র দর্পণে তারই রক্তিম আভা।
সমুদ্রের গর্জনে মাতাল আমি,
থমকে যাই প্রাচীরে মোর ছায়াকে দেখি।
ভালোবেসে ফেলি সেই ছায়াকে
জানি না কেন,ডুবে যাই তার মায়াতে।
কিন্তু সূর্য গ্রাস হয় সমুদ্রে,
অদ্ভুত এক আধার নেমে আসে নগরে।
ভালোবাসার ছায়া বিলীন হয় ভেজা প্রাচীরে,
উন্মাদ ভালোবাসা জ্বলে উঠে
রাস্তার ধারের নষ্ট ল্যাম্পপোস্টে।
বেচে উঠে আমার ছায়া।
কখনো নিজেকে উচু করে তুলতাম,
কখনো বা ত্রিকোণামিতির অংক কষতাম
অনুচ্চ প্রাচীরে ছায়াকে বৃহত্তম করে তুলতে।
পরদিন সূর্য উঠলো তীব্র অহংকার নিয়ে
সমুদ্রও তার সাথে ঝলসে উঠে অন্য নীলে
আর আমার ছায়া হয়ে উঠে পরিস্ফূটিত।
ভালোবাসা নয়,আমি অভিযোগ পাই ছায়া হতে
তার মহিমা নাকি নাকি দাবি করেছি নিজের নামে,
মহিমা বেচে ভালোবাসা চাই।
ক্রোধের অনলে দগ্ধ হয় মগজ,
আঘাত করি ছায়াকে শব্দবানে।
অত:পর শিখি একটি পাপের কত ক্ষমতা।
সকল পূণ্যের মৃত্যু হয় হয় একটি পাপের হাতে
যেভাবে তাসের নগরী ভেঙ্গে পড়ে বিধাতার অভিশাপে
মৃত জীর্ণ অভিশপ্ত নগরী
তার তীরে প্রায়শ্চিত্ত করতে বসলাম সকল পাপের
পাপ ক্ষয়ে গেল,দেবতার চোখে অশ্রু এল।
ছায়ার হৃদয় গলে না।
অত:পর বুঝলাম,সে হৃদয়ে আজ বসত করে সূর্য।
যে তাকে করেছে পরিপূর্ণ।
আর আমি ছিলাম তার হৃদয়ে নয়,মগজে।
এখন আর হৃদয় থেকে রক্ত নয়,পুজ ঝরে।
ভালোবাসা বেচে কিনলাম ভেলা,
পাড়ি দিলাম জীবন সমুদ্রে,
বিকেলের বৃদ্ধ রোদে।
পিছু ফিরে দেখি সেই শেওলাধরা নোনা দেওয়াল
তাতে মোর ছায়া হয়েছে বিলীন।
নিজেকে প্রবোধ দিই সে হয়নি বিলীন,
বেচে আছে সূর্যের অহংকারে।


Popular Posts