একটি অন্যরকম দিন




আমি জীবনে অনেক রেস্টুরেন্টে জনপ্রতি চার অংকের বিল দিয়ে এসেছি, কিন্তু আজকের মত অনুভূতি কোথাও পাই নি। বান্দরবানে আদিবাসীদের একটা লোকাল রেস্তোরা। নাম বংডঃমং৷ ইন্টেরিওর আহামরি কিছুও না। ছবি দেখেই বুঝা যায়।
রেস্টুরেন্টে বাজানো গানের চয়েসগুলোও আমার দেখা সেরা। "এই সুন্দর স্বর্ণালী সন্ধ্যা", " কে প্রথম ভালোবেসেছে", "মানুষ একটা দুই চাকার সাইকেল", "আমি ফাইসা গেছি মাইনকার চিপায়" এর মত বাংলা ক্লাসিক, আজকালকার রেস্টুরেন্ট তো Closer আর Saki Saki এর বাইরে বের হতে পারে না৷
অর্ডার দিলাম চিকেন লাকসোক৷ খাবার খাওয়ায় বিজি ছিলাম তাই ছবি তোলার কথা মনে নাই। প্রচন্ড ঝাল, স্টিল পুরাটা খেয়ে শেষ করেছি, এতটাই ভালো লাগছে৷ জীবনে বহুত স্টাইলে চিকেন খাইছি, বার্গার, পিজ্জা, চাইনিজ, থাই, দেশী ইত্যাদি। স্টিল আমার খাওয়া সেরা চিকেন আইটেমগুলোর মাঝে একটা এই চিকেন লাকসোক।
মালিকের সাথে অনেকক্ষণ কথা হলো। এইরকম অমায়িক মানুষ কম দেখেছি। ভদ্রলোক সাভারে মেডিক্যাল স্টাফ ছিলো, নিশ্চিত চাকরি ছেড়ে নিজ শহরে নিজের স্থানীয় খাবারের রেস্তোরা দিয়েছে, জিজ্ঞেস করলাম "কেন?" বললো " কারণ আমি এখানেই খুশি। বান্দরবানের মত স্বর্গে নিজের রেস্তোরায় নিজের পছন্দের গান বাজাতে বাজাতে নিজেদের খাবার দিয়ে মানুষকে এন্টারটেইন করা। চাকরি করে নিজেকে কষ্ট দিবো কেন, বেতন যতই দিক।" I was just amazed. আমাদের বাস ছিলো ৯ঃ৩০ এ, ৮ঃ০০ এর দিকে এসেছিলাম আমরা। জানার পর বললেন, "বসে যান এখানে, একবারে বাসের জন্য রওয়ানা দিয়েন। আমি একটু বাজার করে আসি। " এতটা আন্তরিকতা, আহা!
মানুষ আজকাল নিউজফিডে ডিপ্রেসনের কম্পিটিশান লাগায়, অথচ সুখ জিনিসটা কত সহজেই পাওয়া যায়! কি অদ্ভুত দুনিয়া।

Popular Posts